৯০ শতাংশ মুসলিম দেশ হওয়া সত্ত্বে রমযান মাসে আমাদের সকল পণ্য কয়েকগুণ বেশি দামে কিনতে হয়েছে কারণ হিসেবে আমি যা পেলাম:

১। গত ২ বছর আমাদের ব্যবসায়ী ভাইরা বেচাকেনা করতে পারে নায়
২। সব বিদেশী প্রোডাক্ট সরকার দাম বাড়াইছে উনাদের কিছু করার নায়
৩। তাঁরা অনেক লসে আছে
৪। যেহেতু ঈদ সেহেতু একটু দাম বেশি রাখলে সমস্যা নায়
৫। তাদেরও বউ বাচ্চা আছে তারাও ঈদ করতে চায় তাই একটু বেশি দামে তারা বিক্রি করলেও সমস্যা নায়
৬। লেবুর হালি ৭০ যেহেতু লেবু বিটিভি তে চাষ হয়
৭। বেগুন ও শসা কৃষকের কাছ থেকে বাজারে আসতে আসতেই ৯০-১১০ টাকা কারণ পথে গায়েবী ভাবে এগুলা পুষ্টিগণ বেড়ে যায়
৮। তেল তো সব সরকারের কাছে ব্যবসায়ীদের কোনো দোষ নাই, তেলে সাপ্লাই বন্ধ, রাশিয়া তেল দিচ্ছেনা
৯। ঈদ উপলক্ষ্যে মাংসের দাম বাড়তেই পারে যেহেতু গরু মাংস শুধু বড়লোক খায়
১০। নিত্য প্রয়োজনীয় দ্রব্য সবই সরকার বাড়াইছে তাদের কিছু করার নাই   কম কম খান স্বাস্থ্য ভাল থাকবে 
১১। তরমুজ একটি দামি ফল, কেজি তে নেন 
১২। ইফতার  ও সাহরি প্লেটার হোক তা ২/৩ দিনের পুরানো যেহেতু এটা ট্রেন্ড!
১৩। গাড়ি ভাড়া ঈদ উপলক্ষ্যে বাড়বে এটা স্বাভাবিক বছরে তারা একবারই বাড়তি খুঁজেন


উদাহারণ: ৬৫০ টাকার জুতা ২৯৫০, ১৯০০০ টাকার শার্ট, ২০১৯ এর প্রোডাক্ট ২০২২ স্টিকার লাগিয়ে বিক্রি করা, বস্তার পিছনে তেল লুকিয়ে রাখা, গোডাউনে তেল মজুদ, ১৪০ টাকার তেল ২২০ টাকা, গরুর মাংস ৯০০ ইত্যাদি  ৪ টাকার লেবু ৭০ টাকার হালি, ১৫ টাকার বেগুন/শসা, ৪০ টাকার তরমুজ, ১০০ টাকার ইফতারে ৫৫০ টাকার প্লেটার, ৬ টাকার ভাড়া ১৫ টাকা রাত হলে অন্য রেট ইত্যাদি


প্রাপ্তি: কিছু স্থানে ভোক্তা অধিদপ্তরের জরিমানা ও বাঙালিকে আরো ভালো ভাবে চেনা


ফলাফল: সরকার ব্যবসায়ীদের কে শুধু দেখে, সরকার গরিবের পেটে লাথি মারে, তেলের দাম সরকার বাড়াক জনগণ কিনব সরকারে কি সমস্যা, ওই দামে কিনতে না পারলে মার্কেট করার দরকার কি? ভাই নিলে নেন না নিলে পথ দেখেন, ১০০ গ্রাম তেলে থলি, তরমুজ না খাওয়ার আক্ষেপ, না উঠলে হাইট্টা যান, মাননীয় প্রধানমন্ত্রী ও নিউমার্কেট মিমস.!


মন্তব্য: এই দেশের ওয়াজ মাহফিল ও মসজিদে সারাবছর দেখবেন আক্বিদা, জান্নাত-জাহান্নাম আর হালাল-হারামের (স্ব কেন্দ্রিক) বয়ান আর আমাগো বাঙালির আ-ফ-গ-স্থান, পা-কি-স্থান, ফি--লি--স্থানের জন্য দরদ, আরব দেশগুলোর মতো আইন, কানাডার প্রধানমন্ত্রীর প্রশংসা, বাংলাদেশ শ্রীলংকা হবে আরো কতশত আলোচনা.! 
কিন্তু নিজের কাজটি যে যথাযথ ভাবে করা প্রয়োজেন, নিজের ব্যবসায়ে, অফিসে যে নৈতিক থাকা প্রয়োজন স্ব স্ব কর্ম যে ধর্ম এর অংশ এই বিষয়টি আমরা ভুলে গেছি বললেই চলে.! কারণ সবার মস্তিকে এখন বাস করে সে করতেছে আমি কেন করব না.? দাম বাড়লেও কি কমলেও কি মানুষ কিনবেই.! যা দেখার সরকারে দেখবে আমার কি.? আমি তো ট্যাক্স দিচ্ছি, ভ্যাট দিচ্ছি।
আমাদের এখন ভাববার সময় এসেছে, স্কুল-কলেজ, বিশ্ববিদ্যালয় ও সর্বপরি পরিবার থেকে আমাদের নৈতিক শিক্ষাগুলো পুনরায় জাগ্রত করার ব্যবস্থা করতে হবে। সরকার কিংবা গুটি কয়েক মানুষের পক্ষে এই সমস্যার সমাধান করা কখনই সম্ভব নয়। কেননা যাদের দ্বারা বাস্তবায়ন হবে তারা নিজেরাই এই সমস্যার সাথে ওতপ্রতভাবে জড়িত। আমাদের সবাইকে অল্পতে সন্তুষ্টি এটা ভাবতে হবে, স্ব স্ব স্থানের কাজগুলো যথাযথভাবে সততার সাথে করার চেষ্টা করতে হবে, আমাদের নিজেদের নফসের জন্য নিজেদের বাঁচাতে হবে। আমাদের জান্নাত জাহান্নামের চেয়ে মানুষ হিসেবে সবাই একসাথে বাঁচব সে বুদ্ধি মস্তিকে ধারণ করতে হবে। 

যদি তা দ্রুত করা না হয় তাহলে আমিও বাংলাদেশ শ্রীলংকা হওয়ার স্বপ্ন দেখতেই পারি.!