সকাল থেকে বলতে গেলে বসে-শুয়ে-পড়ে সময় কাটাচ্ছি একরকম। গত ২-৩ বছর ধরে আমার ঈদের রুটিন এমনয়. চারিদিকে উৎসবের একটা আমেজ থাকলেও আমার কাছে নামায পরে মা কে সালাম করে মায়ের হাতের কিছু খেতে পারলেই যেন খুশি.! আজ সকাল থেকেই চারিদিকে হই-হুল্লোল, গোশ্ত কাঁটার ঠকঠক শব্দ এলেও আমার মনে তা অতি উৎসাহের বা অতি আগ্রহের কোনো স্ফুন হচ্ছেনা বললেই হলো। তার চেয়ে বরং আমার পড়ে ফেলা বই গুলো পড়তেই যেন আমার অতি বেশি আনন্দ লাগছে.! 

সকাল থেকে সবচেয়ে বেশি যে প্রশ্নগুলো আমি আমাকেই ছুঁড়ে দিচ্ছি:- 

-আমি কি তাহলে মানসিকতায় অনেক বড় হয়ে গেলাম.?

-আমার সারাদিন কাজ করার প্রবণতা কি আমার সামাজিকতা থেকে আলাদ করে দিচ্ছে.? 

-অনেকদিন বিনোদন, এনজয় মমেন্ট উপভোগ না করার কারণে কি আমার স্বাভাবিক আনন্দ লোপ পেয়েছে.? 

-নাকি আমি সবকিছুতে থেকে গুটিয়ে নিয়েছি নিজেকে.? 

পরক্ষণে এ সবকটি প্রশ্নের উত্তরও আমার বের হলো। মূলত গত২-৩ বছর ধরে যে মানসিক, পারিবারিক, সামাজিক, পারিপাশ্বিক যে যুদ্ধ আমি করে যাচ্ছি তার তুলোনায় এই ঘটনা গুলো স্বাভাবিক। যেকোন মানুষ যখন একাগ্র চিত্তে কোনো লক্ষ্যে এগোতে থাকবে তখন তার কাছে বাকি সব কিছুই কেমন জানি নিজ থেকে পৃথক পৃথক মনে হবে। তাছাড়া আশেপাশের মানুষজনও তার পাশ থেকে সরে আসে কেননা ‘সফল না হওয়া পযন্ত মানুষের সঙ্গ কেউ পেতে চায়না’। তবে আমার আনন্দ একেবারে নষ্ট হয়ে যায়নি তা আমার জানা আছে খুব ভাল করেই। কোনো অসহায়কে যখন সাহায্য করি, কারো মুখে যখন খাবার তুলে দেয়, কোনো রোগী যখন সুস্থ হয়ে ধন্যবাদ বলে, কোনো মানুষ যখন আমার দ্বারা উপকৃত হয়, কারো মুখের ছোট্ট হাসি যখন দেখতে পাই, তখন আমি অনেক আনন্দিত হই, প্রফুল্লে আমার মন ভরে উঠে.! আমি উৎচ্ছাসিত হয়ে পৃথিবীর সকল কিছু জয় করেছি মনে করে খুশি হই। আর তখন আমার উপলদ্ধি হয় নাহ, কোনো নির্ধারিত খুশির দিনে আমি সবার মতো উৎসবমুখর না হতে পারলেও আমার খুশির কোনো কমতি নেই। আমি অনেকের মাঝে খুশি খুঁজি, আমি আমার রঁবের কাছে বিক্রি হওয়ার পায়তারা করি আর করে যাই, আমি দুয়ারে দুয়ারে খুঁজে বেরায় ঈদ আর ঈদের আনন্দ.!. 

ঈদ মোবারক