বাংলাদেশে তরুণদের উদ্যোক্তা হওয়ার প্রবণতা দিন দিন বাড়ছে। কিন্তু সফলতার পথ শুধু কঠোর পরিশ্রমেই গড়ে ওঠে না। প্রয়োজন সঠিক দিকনির্দেশনা, অজানা তথ্য ও নতুন ধারণা যা তোমার ব্যবসাকে এগিয়ে নিতে পারে। আজকের ব্লগে আমি শেয়ার করবো এমন ৬টি অজানা কিন্তু খুবই গুরুত্বপূর্ণ ব্যবসায়িক তথ্য, যা হয়তো সচরাচর বাংলাদেশি ব্লগে উঠে আসে না। এগুলো তোমাকে নতুন উদ্যম ও মোটিভেশন দিবে।

১. বাংলাদেশের তরুণ উদ্যোক্তাদের সংখ্যা অনেক বেশি, এবং তারা দেশের অর্থনীতির গুরুত্বপূর্ণ অংশ

সম্প্রতি গবেষণায় জানা গেছে, বাংলাদেশে ১৮ থেকে ৩৫ বছর বয়সীদের মধ্যে প্রায় ৩.৮ মিলিয়ন তরুণ উদ্যোক্তা রয়েছে যারা বিভিন্ন ছোট ও মাঝারি ব্যবসায় জড়িত। তারা দেশের নতুন অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধিতে অবদান রাখছে ।

মোটিভেশন: তোমার মত অনেক তরুণই ইতিমধ্যে ব্যবসায়িক যাত্রা শুরু করেছে, তুমি তাদের সঙ্গে যোগ দিয়ে দেশ ও নিজের জন্য নতুন সম্ভাবনা তৈরি করতে পারো।

২. সোশ্যাল মিডিয়া-ভিত্তিক ব্যবসা হচ্ছে তরুণদের জন্য সবচেয়ে সহজ প্রবেশদ্বার

Facebook, Instagram, YouTube এর মাধ্যমে প্রোডাক্ট বা সার্ভিস বিক্রি বাংলাদেশের তরুণ উদ্যোক্তাদের মধ্যে ব্যাপক জনপ্রিয়।

  • কম বিনিয়োগেই শুরু করা যায়

  • দ্রুত লাভবান হওয়া সম্ভব

  • ডিজিটাল পেমেন্ট সিস্টেম যেমন বিকাশ, নগদ সহজলভ্য

মোটিভেশন: মোবাইল আর ইন্টারনেট থাকলেই ব্যবসা শুরু করার সুযোগ আছে, বড় ফান্ড বা ইনভেস্টর খোঁজার ঝামেলা নেই।

৩. ৪র্থ শিল্প বিপ্লব (4IR) প্রযুক্তি আয়ত্ত করলে ছোট ব্যবসাও হয়ে উঠতে পারে বড়

AI, IoT, ক্লাউড কম্পিউটিং, অটোমেশন ইত্যাদি প্রযুক্তি বাংলাদেশে এখনো ব্যাপকভাবে গ্রহণ করা হয়নি। কিন্তু গবেষণায় দেখা গেছে, এই প্রযুক্তিগুলো SMEs-র উৎপাদনশীলতা ও মান দ্রুত বাড়াতে পারে ।
মোটিভেশন: নতুন প্রযুক্তি আয়ত্ত করে তোমার ব্যবসাকে আরও কার্যকর, দ্রুত ও প্রতিযোগিতামূলক করা সম্ভব।

৪. তরুণ উদ্যোক্তারা সামাজিক পরিবর্তনের এজেন্ট হতে পারেন

বিশ্বের অনেক দেশেই তরুণ উদ্যোক্তারা কেবল লাভের জন্য নয়, সমাজ ও পরিবেশের জন্যও ব্যবসা চালাচ্ছেন। African Tony Elumelu Foundation এর ৪০০,০০০ তরুণ উদ্যোক্তা $২.৩ বিলিয়নের আয় ও হাজার হাজার চাকরি তৈরি করেছে ।

মোটিভেশন: ব্যবসা শুধু নিজস্ব আর্থিক উন্নতির জন্য নয়, সমাজ ও পরিবেশের জন্যও বড় প্রভাব ফেলতে পারে।

৫. অভিজ্ঞতার অভাব কখনো বাধা নয় – শুরু করো এখনই

বিশ্বের সফল উদ্যোক্তাদের বেশিরভাগই ক্যারিয়ারের মাঝামাঝি সময়ে ব্যবসা শুরু করেছে, তবে অনেকেই ১৮-২০ বছর বয়সেও শুরু করে সফল হয়েছেন ।

মোটিভেশন: বয়স বা অভিজ্ঞতার অভাব ভাবার কারণ নয়, তোমার উদ্যম ও শেখার ইচ্ছা সবচেয়ে বড় সম্পদ।

৬. ঋণ বা ক্রেডিট পেলে ব্যবসার উন্নয়ন অনেক সহজ হয়

বাংলাদেশে কৃষি ও ক্ষুদ্র ব্যবসায় ঋণের সহজলভ্যতা বাড়ালে উৎপাদন ও আয় উল্লেখযোগ্যভাবে বাড়ে 

মোটিভেশন: সঠিক ঋণ বা ক্রেডিটের মাধ্যমে ব্যবসার পরিধি বাড়ানো সম্ভব, তাই দরকার হলে ব্যাংক বা মাইক্রোফাইন্যান্স প্রতিষ্ঠান থেকে অর্থায়ন নিয়ে ভাবো।

তোমার ব্যবসা বড় করার পথে এই ৬টি তথ্য হতে পারে গুরুত্বপূর্ণ দিকনির্দেশক। সময়ের সঙ্গে তাল মিলিয়ে চলো, নতুন প্রযুক্তি আয়ত্ত করো, এবং সমাজের জন্যও অর্থনৈতিক মূল্য সৃষ্টি করো। তোমার উদ্যোক্তা যাত্রা সফল হোক এই কামনা করি!